top of page

শেখ হাসিনাকে চাপ না দিতে ভারতীয় তদবির: ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন*




বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাপ না দিতে এক বছর আগে ভারতীয় কর্মকর্তারা বিশেষ তদবির করেছিলেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই তদবিরের মূল উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হাসিনার সরকারের ওপর গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যেসব সমালোচনা হচ্ছিল, তা কমিয়ে আনা।


গত জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মী ও সমালোচকদের গ্রেফতারের ঘটনায় মার্কিন কূটনীতিকরা প্রকাশ্যে ৭৬ বছর বয়সী হাসিনার সমালোচনা করেছিলেন। এছাড়াও বাইডেন প্রশাসন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও অপহরণের অভিযোগে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেইসাথে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্রের ক্ষতি করছে এমন ব্যক্তিদের ওপরও ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয় মার্কিন প্রশাসন।


ভারতীয় কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বারবার দাবি করেন যে, যদি বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোকে উন্মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার সুযোগ দেওয়া হয়, তবে দেশটিতে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান হবে, যা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করবে।


ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে ভারত সরকারের এক উপদেষ্টার সাথে কথোপকথনের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা করে ভারত স্পষ্ট করে জানিয়েছিল যে, তাদের জন্য ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুতর সমস্যা। এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, "আপনারা আমাদের কৌশলগত অংশীদার হতে চাইলে আমাদের সঙ্গে কৌশলগত ঐক্যমত্য থাকা জরুরি।"


প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেষপর্যন্ত বাইডেন প্রশাসন হাসিনা সরকারের সমালোচনার সুর নরম করে এবং নিষেধাজ্ঞার হুমকি থেকে সরে আসে। যদিও এই পদক্ষেপে বাংলাদেশের অনেকে হতাশ হয়েছে, তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বিষয়টিকে ভারতীয় চাপের ফলাফল হিসেবে দেখেন না।


প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এলেও, দেশজুড়ে গণআন্দোলনের মুখে তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়ে। অবশেষে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা।


এই ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, বরং আন্তর্জাতিকভাবেও ব্যাপক প্রভাবিত হতে পারে, যেখানে প্রধান ভূমিকায় থাকে শক্তিশালী দেশগুলোর কৌশলগত স্বার্থ।

Comments


bottom of page